বাংলাদেশের পূর্ব ইতিহাস অনেক নির্মম। যারাই রাজ্য শাসন করেছে কেহই নিয়তির আক্রোশ থেকে রক্ষা পায় নাই। অন্যদিকে “প্রকৃতির” তমাল দৌরাত্বের ...
বাংলাদেশের পূর্ব ইতিহাস অনেক নির্মম। যারাই রাজ্য শাসন করেছে কেহই নিয়তির আক্রোশ থেকে রক্ষা পায় নাই। অন্যদিকে “প্রকৃতির” তমাল দৌরাত্বের সাথে যুদ্ধ করেই এ জাতিকে টিকে থাকতে হচ্ছে। জলোশ্বাস, টর্নেডো, সুনামি, ঝড়-তুফান, বন্যা খড়ার পাশা-পাশি রয়েছে নদী ভাঙ্গন, সকালে যে আমির ছিল, ফকির হয়ে যায় সন্ধ্যা বেলা। র্দুভিক্ষের পাশাপাশি রিলিফ চুরি, টেন্ডারবাজীর পাশাপাশি রডের বিনিময়ে বাঁশ দিয়ে মফস্বল এলাকায় সরকারী অফিস/হাসপাতাল নির্মাণ, সন্তানকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা (এ প্রবনতা পূর্বের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে) প্রভৃতি প্রভৃতি ঘটনাকে হার মানিয়ে দেয় যখন চোখের সামনে দেখা যায় মিথ্যার নিকট জাতি পরাজিত হয়ে যাচ্ছে। হিটলারের প্রচার কর্মকর্তা গোয়েবলস্ মিথ্যাকে সত্যে পরিনত করার একটি দুষ্টক্ষত হিসাবে বিশ্ব রাজনীতিতে পরিচিত। বর্তমানে মিথ্যাকে যে ভাবে সত্যে পরিনত করা হচ্ছে তাতে গোয়েবলস্ বেচে থাকলে আমাদের দেশের বুদ্দিজীবি বা কর্তা ব্যক্তিদের নিকট শিষ্যত্ব গ্রহণ করতো।
“জবাবদিহিতা” নামক শব্দটি মনে হয় অভিধান থেকে উঠে যাবে। কারণ যে যে দায়িত্বেই থাকুক না কেন, হউক সাংবিধানিক বা নিম্ন পর্যায়ের সকলেই যেন এখন জবাবদিহিতার উর্দ্ধে। প্রজাতন্ত্রের যারা কর্মচারী বা কর্মকর্তা বা রাষ্ট্রপতি থেকে চৌকিদার পর্যন্ত যারা শুধুমাত্র জনগণের অর্থে কেবল লালিত পালিত নহে বরং সীমাহীন সূখ স্বাচ্ছন্ধ ভোগ করার পরও শুধুমাত্র নিয়োগকর্তার সন্তোষ্টি লাভের জন্য মিথ্যাকে সত্যে এবং সত্যকে মিথ্যা বলে চালিয়ে দিয়ে র্নিদিধায় জনগণকে বঞ্চিত করছে ন্যায্য অধিকার থেকে।
বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় “তেলের বাটী” যেন একমাত্র যোগ্যতার মাপকাঠী। বিচার ব্যবস্থা তো বটেই বরং কর্তাখুশী তো সব খুশী এ বিবেচনায়ই চলছে প্রশাসন, বিচার ও সার্বিক ব্যবস্থা। বৃটিশ সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় ব্লু ব্লাড বলতে একটা সমাজ রয়েছে যাদের জন্য আইন ও আইনের শাসন অনেক শিথীল থাকে। বাংলাদেশেও একটি ব্লু ব্লাড সৃষ্টি হয়েছে যারা ক্ষমতায় রয়েছে তাদের মধ্যে থেকে। ব্লু ব্লাড এর প্রতিনিধি ও রক্ত কনিকা ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী, যারা ব্যবসা, বানিজ্য, ঠিকাধারী, সর্দারী, মাতব্বরী সবই নিয়ন্ত্রণ করে এবং যাদের সেবা দাস হিসাবে সদা প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন। ব্লু ব্লাডেরা যেহেতু রাষ্ট্র ও সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করছে সেহেতু সুবিধা সন্ধানী ও সুবিধাভোগীরা তাদের পক্ষেই হাত তালি দিচ্ছে, যোগান দিচ্ছে সমস্ত শক্তি এবং লুটে খাচ্ছে সাধারণ জনগণের আহার, বিপদগ্রস্থ হচ্ছে তারা যারা বিবেকের তাড়নায় বোল পাল্টিয়ে ব্লু ব্লাডের পদতলে নিজেকে আত্মহুতি দিতে পারে নাই।
বাংলাদেশে আমলাতন্ত্রের বেতন ভাতা চলে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থে, কিন্তু তারা ব্লু ব্লাডের সেবা দাসে পরিনত হয়েছে। অথচ সংবিধান বলছে যে, [অনুচ্ছেদ ২১(২)] “সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য।” অথচ নিম্ন বর্ণিত ঘটনা থেকেই উপলব্দি করা যাবে জনগণের বেতনভুক্ত আমলাতন্ত্র দল মত নির্বিশেষে জনগণকে কতটুকু “সেবা” দিয়ে যাচ্ছে? ঘটনাটি হলো একদিন (২০১৮ ইং জানুয়ারি মাস) সুপ্রীম কোর্টের একজন সুনাম ধন্য ব্যারিষ্টার গাজীপুর জেলার সাভারে গিয়েছিলেন তার একটি ব্যক্তিগত কাজে। হঠাৎ একটি ট্রাক উল্টো পথে এসে গাড়ীটিকে ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে দেয়ায় তিনি নিকটস্থ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট শরনাপন্ন হলে ও.সি সাহেব ব্যবহারটা এমন করল যে, মামলা নেয়া তো দূরের কথা ব্যারিষ্টার সাহেবকে ও.সি সাহেব পাত্তা না দিয়ে পাল্টা তার (ব্যারিষ্টারের) দোষ খুজতে থাকেন। ব্যর্থ মন নিয়ে পরের দিন ব্যারিষ্টার সাহেব শরনাপন্ন হলেন এক দূর সর্ম্পকীয় মামার নিকট যিনি পুলিশের একজন ডি.আই.জি (পুলিশের উপ-মহা পরিদর্শক)। ডি.আই.জি ফোন করে ব্যারিষ্টার সাহেবকে সহযোগীতা করার জন্য ও.সি’কে বলে দিলে ব্যারিষ্টার সাহেব পরের দিন থানায় পৌঁছা মাত্র ও.সি সাহেব এগিয়ে এসে ব্যারিষ্টার সাহেবকে বলেন যে, “আপনি তো আমার মামা লাগেন, এখন বলেন আপনার জন্য আমি কি কি করতে পারি?” তখন ও.সি ট্রাক ড্রাইভার ও মালিককে ডেকে এনে নগদ ক্ষতিপূরণ আদায় করে দিলেন। ফলে ব্যারিষ্টার সাহেবকে মামলা করতে হলো না, কোর্টে যেতে হলো না, নগদ নগদেই বিচার টা পেয়ে গেলেন, শুধু মাত্র ব্লু ব্লাডের (ডি.আই.জি) একটি টেলিফোনের কারণে। ভাগ্যহত এই জাতির, যার কোন ব্লু ব্লাডের রেফারেন্স নাই সে এখন সর্বহারা, মার খেয়ে বিচার পাবে না, অথচ রেফারেন্স থাকলে খুনীও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াবে, নিজে আত্মতৃপ্তি লাভ করবে, অথচ খুনিকে খুনী বলা যাবে না, এটাই আমাদের সমাজ ব্যবস্থা।
বিচার বিভাগ সম্পর্কে বলা হয় যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই। এ জন্য দায়ী কে? বিচারকরা নিজেই যদি নিজের মেরুদন্ড সোজা রাখতে না পারেন তবে আইন করে তাকে কতটুকু সোজা রাখা যাবে? দেশব্যাপী এখন সরকার কর্তৃক পুলিশকে বাদী করে গায়েবী মোকদ্দমা হচ্ছে। গায়েবী মোকদ্দমা অর্থাৎ যেখানে কোন ঘটনা ঘটে নাই, মিথ্যা বানোয়াট কাহিনী সাজিয়ে প্রতি থানায় প্রতিদিনই মামলা হচ্ছে যেখানে মৃত ব্যক্তি, বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তি, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এমন কেহই গায়েবী মামলা অর্থাৎ গায়েবী গজব থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। জাতীয় পত্রিকান্তরে ০৩/১০/২০১৮ ইং তারিখে প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায় যে, সেপ্টেম্বর/২০১৮ মাসে দেশব্যাপী গায়েবী মামলার সংখ্যা ৪,০৯৬ যার মধ্যে এজাহার নামীয় আসামী ৮৪,৫৩৫ জন, অজ্ঞাত রয়েছে ২৭,৩০৭৫ জন। দন্ডবিধির ১৭৭ ধারা থেকে ২২১ ধারা পর্যন্ত মিথ্যা মামলা, মিথ্যা স্বাক্ষ্য প্রদান, মিথ্যা সার্টিফিকেট প্রদান প্রভৃতি প্রভৃতি অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান থাকা স্বত্বেও পুলিশ জেনে শুনে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কি ভাবে মিথ্যা ও মিথ্যা গায়েবী মামলা সৃজন করছে? সরকারের আমলা বা পুলিশের বড় বড় কর্মকর্তাদের দায়িত্ব কি মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করা? পুলিশ কি জবাবদিহিতার উর্দ্ধে?
দেশে মানুষ যারা শেখ হাসিনা সরকারের জয়গান গায় না তাদের ভোগান্তির আর শেষ নাই। গায়েবী মামলা অর্থই জেল ও রিমান্ড। ম্যাজিষ্ট্রেট গায়েবী মামলা মিথ্যা জেনে শুনেই রিমান্ড দিচ্ছে। রিমান্ডে কি পরিমাণ বাণিজ্য তা এ দেশের সন্তান হিসাবে নিশ্চয় ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবরা জানেন। তা জানা স্বত্বেও রিমান্ড দিচ্ছে সকল প্রার্থীত মামলায়। এ জন্যই কি দেশটি স্বাধীন হয়েছিল? ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব তো স্বাধীনতার পূর্বের মত পাকিস্তানী বা বৃটিশ নাগরিক নহে। তারা চাকুরী ক্ষেত্রে সুবিধাজনক পোষ্টিং আর প্রমোশনের আশায় বা কোন অসুবিধাজনক স্থানে বদলী হয়ে হওয়ার ভয়ে ন্যায় বিচারের পরিবর্তে পুলিশী ভাষায় বিচারিক সিদ্ধান্ত প্রদান করা কি স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী, নাকি স্বাধীনতার চেতনার সহায়ক?
নারায়নগঞ্জ জেলার আইনজীবিদের সূত্রে জানা যায় যে, কোন রাজনৈতিক মামলায় জামিন দেয়া যাবে না বলে ০১/১০/২০১৮ ইং জেলা ও দায়রা জজ বাহাদুর প্রকাশ্য আদালতে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি জেলার সর্বোচ্চ বিচারক, দাড়িপাল্লা খচিত চেয়ারে বসে তিনি ন্যায় ও ইনশাফ করার প্রতিশ্রুতি বন্ধ। রাজনৈতিক মামলা বা রাজনীতির প্রতি তার এতো এলার্জি থাকবে কেন? রাজনীতি যদি এ দেশে নিষিদ্ধ হয়ে যায় তবে স্বাধীনতার প্রয়োজন কি ছিল? রাজনীতি আছে এবং ছিল বলেই তো বাংলা ভাষা মাতৃভাষা ও আন্তর্জাতিক ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। রাজনীতি ছিল বলেই বাংলাদেশের ছেলে সন্তানেরা এ দেশে বিচারকের আসন অলংকৃত করতে পেরেছে। তারপরও রাজনীতির প্রতি এলার্জি হওয়ার একমাত্র কারণ নিজের সুবিধাজনক পোষ্টিং ও প্রমোশনকে কি ঠিক রাখা?
এ দেশের একটি বুদ্দিজীবি সমাজ রয়েছে, জাতির ক্রান্তি লগ্নে জাতির পাশে তারা এগিয়ে আসবেন এটাই জাতির প্রত্যাশা, কিন্তু তারাও এখন দলবাজীতে ব্যস্ত। সম্প্রতি জনগণের গলাকে চিপে ধরার জন্য প্রনীত ডিজিটাল আইন’২০১৮ সম্পর্কে তাদের ঐক্যবদ্ধ কোন রা নাই। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ মোতাবেক চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। অথচ ডিজিটাল আইন’২০১৮ এর কুফল সম্পর্কে সরকার ঘরনার হাই প্রো-ফাইলের বুদ্দিজীবিরা এখন নিরব নিস্তব্দ। অন্যদিকে সাংবাদিকতা জগতের ঐক্যের প্রতীক জাতীয় প্রেস ক্লাবকেও সরকারী ঘরনার সাংবাদিকরা কুক্ষিগত করে রেখেছে, সেখানে সরকার বিরোধী সাংবাদিকের প্রবেশ রুদ্ধ করে দিয়েছে। এটাই স্বচ্ছতা? এটাই কি গণতন্ত্র?
দেশে কিছু প্রতিষ্ঠান থাকা দরকার যেখানে দল মত নির্বিশেষে বসার, আলোচনা করার, অংশ গ্রহণ করার জন্য খোলা থাকবে, যেমন-বাংলা একাডেমী। কিন্তু সেই বাংলা একাডেমীকেও কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে একটি অনির্বাচিত কমিটি দ্বারা যার সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন সরকার ঘরনার দেশের সর্বোশ্রেষ্ট্র বুদ্দিজীবি যাকে সম্প্রতি কোলকাতার সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। তারা মূখে বলেন স্বাধীনতার চেতনার কথা, অথচ কর্ম হলো এক নায়কতন্ত্র। একটি রাষ্ট্র বা জাতির ভারসাম্য ঝুকিপূর্ণ হয়ে যায় যখন সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার মানসিকতা মানুষ হারিয়ে ফেলে। পাছে লোকে কিছু বলে বা নিজেকে ক্ষমতাসীনদের অনুকল্পার প্রত্যাশায় সত্যকে সাপোর্ট করা থেকে নিজেকে বিরত রাখে তখনই মানুষ বলে জাতি বা রাষ্ট্র খাদের কিনারায়। পা পিছলে গিয়ে খাদে পড়া বা নিজেকে সুবিধাজনক অবস্থায় রাখা বা নিজেকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রাখার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে খাদে ফেলানো এক কথা নয়। ব্যর্থতা আর জাতির সাথে গাদ্দারী এক কথা নহে।
গণমানুষের জানমালের নিরাপত্তা এবং গণমানুষ রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের ভয়ে উর্দ্ধে থাকবে এটাই গণতন্ত্র ও সভ্য সমাজের দাবী। কিন্তু দু:ক্ষজনক হলেও সত্য যে, গণমানুষ যারা ক্ষমতাসীনদের বিরোধী তারা এখন রাষ্ট্রের ভয়ে সবচেয়ে বেশী কাতর থাকে। তারপরও কি রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে সর্বস্তরে যেখানে সরকারের সমালোচনাকারীদের আশ্রয় পাওয়ার কথা তার কি বাস্তবায়ন হচ্ছে? সাবেক প্রধান বিচারপতি প্রকাশ্যে বলেছেন যে, ডি.জি.এফ একাই তাকে লাথি মেরেছে, জোরপূর্বক দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে তারপরও কি বলা যাবে যে, হক কথা বলার জন্য বা এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য কোন গোষ্টি এগিয়ে এসেছে? বরং দুদক এগিয়ে এসেছে সিনহা বাবুর কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেয়ার জন্য। দুদক আইনে সিনহা দোষী হতে পারে বা নির্দোষ এ সম্পর্কে আমার কোন মন্তব্য নাই। কারণ সিনহা নিজেও দুদকের হাতকে অনেক সম্প্রসারিত করেছেন, দুদকের অবিচারের বিরুদ্ধে সরকার বিরোধীদের তিনি বিন্দুমাত্র রিলিফ দেন নাই বরং বিচার পাওয়ার পথ সংকুচিত করে দিয়েছেন, বিচারপতির দায়িত্ব পালনের চেয়ে রাজনৈতিক খেলায় নিজেকে বেশী মাতিয়েছেন। তারপর বলতে চাই সিনহার গায়ে হাত তুলে সরকার বিচার বিভাগের গায়ে হাত তুলেছেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য যারা জীবন দেন তাদেরও মুখে এ মর্মে প্রতিবাদের জোড়ালো সুর পরিলক্ষিত হয় নাই। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার গায়ে হাত দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিগণ নিজেরাও। সংবিধানের শোষড় সংশোধনী মামলার রায়ে এ্যাপিলেট ডিভিশনের সকল বিচারপতি ঐক্যমত পোষন করে স্বাক্ষর করেছেন, কিন্তু রাষ্ট্রপতি তাদের ডেকে যখন কথা বললেন তখন তারা বললেন যে বিচারপতি সিনহার সাথে আমরা ব্যাঞ্চে বসবো না।
একই অঙ্গে যদি এতো রূপ থাকে তবে জাতি দাড়াবে কোথায়? নিজের স্বার্থের চেয়ে জাতির স্বার্থ যদি মানুষ আগে না দেখে, সবাই যদি ভয় ভীতি, প্রলোবন, কামনা বাসনার নিকট নিজের বিবেককে বিক্রি করে দেয়, এমতাবস্থায় একটি “হক কথার” জন্য জাতি কার দ্বারস্থ হবে? এ জন্যই বার বার একটি কথা স্বরনে আসে যে, জনসংখ্যা ১৬ কোটি, মানুষ আছে কয় জন?
তারিখঃ ০২/১০/২০১৮
- [accordion]
- লেখক সম্পর্কে জানুন
- পোস্টটি লিখেছেন- বিশিষ্ট কলামিস্ট তৈমূর আলম খন্দকার। পেশাগত জীবনে তিনি আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে কর্মরত আছেন।
- সাধারণ নোটিশ
- টকেটিভ বাংলা ব্লগের সকল সম্মানিত লেখককে এই মর্মে জানানো যাচ্ছে যে, অত্র ব্লগে কোন ধরণের কাট-কপি-পেস্ট লেখা প্রকাশ করা হবে না। কোন লেখা কাট-কপি-পেস্ট প্রমাণিত হলে ঐ লেখা কোন ধরণের পূর্ব নোটিশ ছাড়াই মুছে দেওয়া হবে এবং সংশ্লিষ্ট লেখকের কোন পোস্ট পরবর্তীতে অত্র ব্লগে প্রকাশ করা হবে না।
- লিখুন এবং উপার্জন করুন
- টকেটিভ বাংলায় আপনাকে স্বাগতম! টকেটিভ বাংলায় মান সম্মত লেখা জমা দিয়ে খুব সহজেই আয় করতে পারেন। টকেটিভ বাংলা বিশ্বাস করে প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যেই মেধা রয়েছে। এখন প্রয়োজন হলো সেই মেধার বিকাশ ঘটানো। মেধাকে লুক্কায়িত না রেখে বিশ্বের মাঝে ছড়িয়ে দিলে দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও কল্যাণ হবে। টকেটিভ বাংলা মেধা বিকাশের সেই সুযোগটিই করে দিচ্ছে। পাশাপাশি লেখকদের নিজের পরিচিত বাড়িয়ে তোলা ও প্রতি কন্টেন্টের জন্য টাকা উপার্জনের সুযোগ করে দিচ্ছে। তাই আপনার মাথায় যদি গিজগিজ করে নিত্যনতুন আইডিয়া, চিন্তা, চেতনা তাহলে ঝড় তুলুন কী-বোর্ডে।
টকেটিভ বাংলা থেকে আয় করতে হলে নিচের শর্তাবলী মেনে চলতে হবে-
১। আপনাকে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিতে হবে এবং নিজের প্রোফাইল থেকে কমপক্ষে ১০০ জন ফেসবুক ফ্রেন্ডকে আমাদের ফেসবুক পেইজের (টকেটিভ বাংলা) ইনভাইটেশন পাঠাতে হবে। (বাধ্যতামূলক না তবে এর মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তুলে ধরতে পারবো)।
২। এরপর সাইটে ভিজিট করে কম পক্ষে ৫ টি লেখা নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করতে হবে ও সেগুলোতে গঠন মূলক কমেন্ট করতে হবে। (বাধ্যতামূলক না, তবে এর মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তুলে ধরতে পারর। আর এই ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কাম্য।)
৩। প্রথমে টকেটিভ বাংলা সাইট টি ভিজিট করে আমাদের প্রকাশিত কন্টেন্ট সম্পর্কে আইডিয়া নিতে হবে। এরপর ৫০০-৭০০ শব্দের ১টি সম্পূর্ণ মৌলিক, কপি-পেস্ট বিহীন কন্টেন্ট আমাদের ওয়েবসাইটে পাঠাতে হহবে। লেখাটির মান ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করা স্বাপেক্ষে প্রকাশিত হবে। কোন লেখা কপি-পেস্ট বলে প্রমাণিত হলে তাকে টকেটিভ বাংলা থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে। প্রথম কন্টেন্ট যাচাইয়ের জন্য নেয়া হবে। লেখার বিষয়বস্তু আপনি নিজে পছন্দ করতে পারবেন।
৪। ২য় লেখা থেকে আপনি পেমেন্টের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। লেখার মান অনুযায়ী প্রতি লেখার জন্য ৫০ টাকা পাবেন এবং ১০ টি লেখা পেমেন্ট এর জন্য বিবেচিত না হওয়া পর্যন্ত পেমেন্ট এর জন্য অনুরোধ করতে পারবেন না। কোন পোস্ট প্রকাশিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নূন্যতম ১০ টি পজিটিভ ভোট প্রাপ্ত না হলে উক্ত পোস্ট পেমেন্ট এর জন্য বিবেচিত হবে না। বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট প্রদান করা হবে।
৫। এছাড়া একজন নিয়মিত লেখককে টকেটিভ বাংলায় প্রকাশিত নিজের লেখা+অন্য লেখাদের কমপক্ষে ৪ টা লেখা সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুকে শেয়ার দিতে হবে। তাছাড়া ওয়েব সাইটে নিয়মিত গঠনমুলক মন্তব্য করতে হবে।
৬। দেশের প্রচলিত আইনের বিরোধী, কোন বিশেষ ধর্ম, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অথবা দেশকে কটাক্ষ করে কিছু লেখা যাবে না। এ ধরণের লেখা প্রকাশিত হবে না।
৭। একটি পোস্ট নূন্যতম ৫০০ শব্দের না হলে সেই পোস্ট পেমেন্ট পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবে না।
৮। কোন কবিতার ক্ষেত্রে সর্ব নিম্ন ১৪ লাইনের কবিতা না হলে এবং নূন্যতম ১৪ টি পজিটিভ ভোট ও ১৪ টি মন্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত উক্ত কবিতা পেমেন্ট এর জন্য মনোনীত হবে না।
৯। কোন কপি, পেস্ট করা পোস্ট বা ভুল তথ্য সম্বলিত পোস্ট পেমেন্ট পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে না।
১০। টকেটিভ বাংলা ব্লগে লেখার নিয়ম, নীতিমালা ও শর্তাবলী বহির্ভূত কোন পোস্ট পেমেন্ট পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে না। (টকেটিভ বাংলা ব্লগের নীতিমালা ও শর্তাবলী)১১। পোস্টে অন্য কোথাও থেকে উদ্বৃতি দিতে হলে অবশ্যই রেফারেন্সসহ দিতে হবে।
১২। একজন লেখকের নূন্যতম ১০টি পোস্ট পেমেন্ট এর জন্য মনোনীত হলেই কেবল তিনি “রিওয়ার্ড ক্লেইম ফর্ম” পূরণ করে টকেটিভ বাংলা কর্তৃপক্ষের নিকট পেমেন্ট এর জন্য অনুরোধ করতে পারবেন।
১৩। একজন লেখক পেমেন্ট পাওয়ার যোগ্য হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে “রিওয়ার্ড ক্লেইম ফর্ম” পূরণ করে টকেটিভ বাংলা কর্তৃপক্ষের নিকট পেমেন্ট এর দাবি না করলে তার সমস্ত পেমেন্ট বাতিল বলে গণ্য হবে।
১৪। কোন পোস্ট টকেটিভ বাংলায় জমা দেওয়ার সময় ৫ সংখ্যার একটি ইউনিক কোড এবং জন্ম তারিখসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি প্রদান করতে হবে। এই ইউনিক কোডটি প্রতিটি পোস্টের ক্ষেত্রে সব সময় একই থাকবে। পৃথক পৃথক পোস্টের জন্য পৃথক পৃথক ইউনিক কোড ব্যবহার করা যাবেনা। এই ইউনিক কোডটি লেখককে সংরক্ষণ করতে হবে। কারণ পেমেন্ট ক্লেইম করার সময় এই ইউনিক কোডটি প্রয়োজন হবে। ইউনিক কোডটি অন্যের নিকট শেয়ার করা যাবে না।
১৫। উপরের সকল শর্তাবলীর কোন একটি না মানলেও পোস্টটি প্রকাশিত হতে পারে। তবে সেই পোস্টটি পেমেন্ট এর জন্য মনোনীত হবে না।
সাইটের বিষয়ে লেখক ও পাঠকদের যেকোন গঠনমূলক সমালোচনা, মতামত সাদরে গৃহীত হবে। এ সাইট আপনাদের, একে এগিয়ে নেবার দায়িত্ব আপনাদেরই।
বিঃদ্রঃ পূর্ব নোটিশ ছাড়াই উপরোক্ত শর্তাবলী যেকোন সময় টকেটিভ বাংলা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংশোধিত, পরিবর্তিত বা সংযোজিত হতে পারে। - আমাদের কথা
- অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং অনেক জীবনের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এই বাংলা। পেয়েছি বাংলা ভাষা। তাই বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ হৃদয়ের গভীর থেকে। আমরা আবেগ-অনুভূতি-চিন্তা-চেতনায় ক্রমাগত মাটির গন্ধ খুঁজে বেড়াই। গন্ধ খুঁজে পার্থক্য করি বেলে-দোআঁশ-কাঁদা-পলি মাটি। এই মাটির সোঁদা গন্ধে আমাদের বেড়ে ওঠা। আমাদের কণ্ঠ মাটির কথা বলে, আমাদের কণ্ঠ এই মাটির সবুজ প্রকৃতির কথা বলে, আমাদের কণ্ঠ মাটিকে ভালবাসতে বলে। আমরা লালন করি একুশের চেতনা, আমরা লালন করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ধর্ষিতা বোনের শাড়ি আমাদের পবিত্র স্মৃতি। ৩০ লক্ষ শহীদ আমাদের পথের দিশারী। তাঁদের অসমাপ্ত পথ সমাপ্ত করার জন্য আমাদের জন্ম। লাল সবুজের পতাকার প্রতি আমরা সদা অবনত। আমরা নিরপেক্ষ নই আমরা অসুন্দরের বিপক্ষ শক্তি, অন্যায়ের বিপক্ষ শক্তি, স্বাধীনতার শত্রুদের বিপক্ষ শক্তি। আমরা প্রগতির পক্ষে, আমরা অন্ধ গোঁড়ামির বিপক্ষে। আমরা গল্প করবো, আড্ডা দেব, তর্ক করবো, বিতর্ক করবো। আমরা প্রস্তাব দেব, আলোচনা করবো। আমরা যুক্তির কথা বলবো, আমরা গণমানুষের মুক্তির কথা বলবো।
তবে সবই হবে বাংলায়, একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে। আমরা স্বাধীনভাবে বলবো কিন্তু বাধাহীনভাবে নয়। আমরা সত্যের সন্ধানে দান্দিক হবো। বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবো। এই মাটির প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পালনে দৃঢ় থাকবো। আমরা কোনো কর্তৃপক্ষ নই, এই বাংলার প্রতিটি মানুষের সুন্দর স্বপ্ন নিয়েই আমরা। চর্যাপদের বুভুক্ষু পা আমরা, সুকান্ত’র চাঁদে ঝলসানো রুটি খোঁজা মানুষ আমরা। আমরা জসিম উদ্দিনের নকশী কাথার মাঠ। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কারিগর আমরা। হাজার বছরের বাঙালিয়ানা নিয়ে আমাদের পথ চলা। শুভ হোক ব্লগীং।
আমাদের ব্লগ ব্যবহারের নীতিমালা ও শর্তাবলী দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
COMMENTS